logo

সম্পাদকীয়

বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ (বিসিসিপি)-এর মুখপত্র হিসেবে সংযোগ তার নিজ পরিচিতিতে ২৫ বছর ধরে চলমান। বর্তমানে এর পাঠকের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোগের বিষয় ও আঙ্গিকে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একই সাথে সংযোগের ই-ভার্সান প্রকাশিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের উদ্দেশ্য বিসিসিপিÕর বিবিধ যোগাযোগ কার্যক্রমের সঙ্গে পাঠককে সম্পৃক্ত করা। কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির পরিবেশ, সামাজিক রীতি-নীতি, মূল্যবোধ, অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পায়।আমরা চাই সংযোগ-এর মাধ্যমে কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সাথে একুশ শতকের সকল মানুষের সংযোগ স্থাপিত হোক। আর তাই তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে আইসিটি নির্ভর সংযোগ-এর ই-ভার্সানও হয়ে উঠুক আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার, এই আশা রাখি।
 
শুভেচ্ছা।

জাতীয় এসবিসিসি ল্যান্ডস্কেপের ক্ষেত্রে বিকেএমআই-এর অবদান

গত আগস্ট ২০১৬ তে হেলথ কমিউনিকেশন ক্যাপাসিটি কোলাবরেটিভ (HC3) এর একটি মূল্যায়ন দল বাংলাদেশে এসেছিলেন বিকেএমআই প্রকল্পের আউটকাম মূল্যায়ন করার জন্য। এই দলে “আউটকাম হার্ভেস্টিং” বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন বিশেষজ্ঞও ছিলেন। “আউটকাম হার্ভেস্টিং” হচ্ছে একধরনের কোয়ালিটেটিভ পদ্ধতি (Qualitative Methodology)। দলটির পরিচালনায় বিকেএমআই টিমের অংশগ্রহণে এবং অনুশীলনে  ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিকেএমআই প্রকল্পের ৬৬টি আউটকাম ফলাফল সংগ্রহ করেন।
 
পরবর্তীতে সকল আউটকাম অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত উৎসের মাধ্যমে একজন কনসালটেন্টের সহায়তায় যাচাই করা হয় এবং এই মূল্যায়ন দলের কাছে পাঠানো হয়।

সিএসিভিপি’র অধীনে আউটরিচ কার্যক্রম

সহিংসতা থেকে শিশু সুরক্ষায় কমিউনিটির করণীয় শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিসিসিপি শিশুর অধিকার রক্ষা এবং শিশদের প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে সম্প্রতি ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বেশকিছু আউটরিচ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি মিটিং, ভিডিও শো, প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং ইন্টারএকটিভ থিয়েটার শো।
 
উক্ত কমিউনিটি মিটিং-এ সরকারি কর্মকর্তা, অভিভাবক, এনজিও প্রতিনিধি, শিশু/কিশোর, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন এবং ভিডিও শো’তে উক্ত সিটি কর্পোরেশনের বস্তি এলাকার সর্বসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। উল্লিখিত তিন সিটি কর্পোরেশনের বস্তি এলাকায় ইন্টারএকটিভ থিয়েটার শো প্রদর্শনী চলছে।

চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা সম্পন্ন

বিসিসিপি ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পার্টিসিপেটরী এফরেস্টেশন এন্ড রিফরেস্টেশন (সিআরপিএআরপি) প্রকল্প এলাকার জনগণের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক বনায়ন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য বিসিসি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্কুলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে একটি চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
 
এই চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য ছিলো বনায়নের গুরুত্ব ও উপকারিতা সম্পর্কে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি; এবং বনায়ন ও বন সংরক্ষণে তাদের উদ্বুদ্ধ করা।প্রকল্প এলাকার ৭টি জেলায় ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। জেলাগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালী। চিত্রাংকন সম্পর্কে বিশদ ভাবে ধারণা আছে স্থানীয় পর্যায়ের এরকম তিনজন ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি বিচারক প্যানেল গঠন করা হয়েছিল। ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীদের একটি সনদপত্র ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। স্ব স্ব এলাকার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ স্থান নির্ধারণীদেরকে পুরস্কার বিতরণ করেন।

মাঠকর্মী এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য তৈরি ই-টুলকিট এবং ই-লানিং কোর্সগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচার

স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতে সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনে যোগাযোগ কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ নলেজ ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বিকেএমআই) প্রজেক্ট এক সেট ডিজিটাল রিসোর্স তৈরি করেছে। রিসোর্সগুলোর ভিতরে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টিখাতে কর্মরত মাঠকর্মী এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য এসবিসিসি ই-টুলকিট, মাঠকর্মীদের জন্য আটটি মডিউল বিশিষ্ট বাংলা ই-লার্নিং কোর্স এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য দুটি ই-লানিং কোর্স অন্তর্ভুক্ত।
 
প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য তৈরি কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনে যোগাযোগের জন্য  ম্যাসেজ ও ম্যাটেরিয়াল ডেভেলপমেন্ট এবং মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন কোর্স। সকল রিসোর্সগুলো অনলাইনে বিনামূল্যে সহজলভ্য। মাঠকর্মীদের জন্য তৈরি  ই-টুলকিটটি  অনলাইন এবং এন্ড্রোয়েড অ্যাপ (বিডি এইচপিএন টুলকিট)-এর মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য। ই-টুলকিটগুলো বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডোমেইনে মাইগ্রেট করা হয়েছে। মাঠকর্মীদের জন্য তৈরি ই-টুলকিটটির ঠিকানা হলো  http://etoolkits.dghs.gov.bd/ এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য তৈরি ই-টুলকিটটির ঠিকানা হলো  http://etoolkits.dghs.gov.bd/toolkits/bangladesh-program-managers ।
 
বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদেরকে ডিজিটাল রিসোর্সগুলো সম্পর্কে অবহিত করার জন্য জাতীয় পর্যায়ের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্যায়ে রিসোর্সগুলোর প্রচার এবং ব্যবহার বাড়ানোর জন্য একাধিক ইভেন্টের ব্যবস্থা করা হয়।  ডিজেমিনেশনের অংশ হিসেবে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য তৈরি ই-টুলকিট এবং ই-লার্নিং কোর্সগুলো বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্ট করা হয়। ওরিয়েন্টেশন দেয়া হয় মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন এবং ম্যাসেজ এন্ড ম্যাটেরিয়াল ডেভেলপমেন্টের উপর। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, গ্রীন ইউনিভার্সিটি, জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীসহ ৩০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীদেরকে কোর্সগুলো সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এছাড়াও কোর্সগুলো বিভিন্ন সভা ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের সাথে শেয়ার করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জন অংশ গ্রহণকারী কোর্সগুলো সম্পন্ন করে সার্টিফিকেট  গ্রহণ করেছে।
 
একই সময়েই বিকেএমআই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহায়তায় মাঠকর্মীদের জন্য তৈরি  ই-টুলকিট এবং ই-লানিং কোর্স ফন্টলাইন কর্মীদের মাঝে জানানোর উদ্যোগ নেয়া হয় এবং চারটি বিভাগ ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং সিলেট পরিদশর্ন করা হয়। ফন্টলাইন কর্মীদের মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদশর্ক, পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক তাদের এন্ড্রোয়েড ট্যাব (বাংলাদেশ সরকারকর্তৃক প্রদেয়) নিয়ে ওরিয়েন্টশনে অংশগ্রহণ করেন। সরকারী কর্মকর্তাসহ বিকেএমআই টিমের সদস্যরা মাঠকর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। প্রায় ১০০ জন  মাঠকর্মী অফলাইন এবং অনলাইন ই-লানিং কোর্স সম্পন্ন করেছে। 
 
উল্লেখ্য, ইউএসএআইডি কর্তৃক অর্থায়নকৃত কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী প্রজেক্ট বিকেএমআই যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে জনস হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগামস এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস (বিসিসিপি)।

যোগাযোগ বিষয়ক তথ্যাবলী

আধুনিক যোগাযোগ কৌশলের একটি অন্যতম অনুসঙ্গ হচ্ছে সমাজ উন্নয়ন, শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষন ও কর্মশালা। যেকোন প্রশিক্ষন বা কর্মশালাকে সফল করার জন্য বিষয়বস্তুর উপস্থাপনা আকর্ষণীয় ও যথাযথ হওয়া প্রয়োজন যাতে বিষয়টির প্রতি অংশগ্রহণকারীদের মনোযোগ আকর্ষিত হয় এবং তারা সেটি অনুসরণে আগ্রহী হয়। এক্ষেত্রে বার্তা উপস্থাপনাকারী বা ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
 
ফলপ্রসূ উপস্থাপনার বৈশিষ্ট্য
 
যেকোন বিষযবস্তুর উপস্থাপনাকে ’ফলপ্রসূ’বা effective করতে হলে ফ্যাসিলিটেটরকে ৮টি বৈশিষ্ট্যের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে, উপস্থাপনাটি তথ্যপূর্ণ (Informative) ও সত্য ঘটনা সম্পর্কিত (Factual) হতে হবে এবং উপস্থাপনা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে অংশগ্রহণকারীদের সার্বিক বৈশিষ্টের ভিত্তিতে। এছাড়াও উপস্থাপনাটি হতে হবে ব্যাখ্যামূলক (Explanatory), সৃজনশীল, আকর্ষণীয়, আনন্দদায়ক এবং সময়োচিত (Time-bound)। এগুলোর সমন্বয় সম্ভব হলেই কেবল বার্তাটি উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণীয় হয়ে উঠবে।
 
ফলপ্রসূ উপস্থাপনা ও উপস্থাপকের দক্ষতা
 
প্রশিক্ষণের বিষয়াবলী অংশগ্রহণকারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার ওপরই মূলত প্রশিক্ষণ পরিচালনার সফলতা নির্ভর করে। আর এই কাজটি যেহেতু উপস্থাপকের সুতরাং একজন সফল উপস্থাপককে অবশ্যই নিম্নোক্ত বিষয়ে দক্ষতার অধিকারী হতে হবে।
 
উপস্থাপনার দক্ষতা: ফ্যাসিলিটেটর বা উপস্থাপক অংশগ্রহণকারীদের মুখোমুখি হয়ে এমনভাবে দাঁড়াবেন এবং কথা বলবেন যাতে তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক ‘আই কনট্যাক্ট’ স্থাপিত হয়। ফ্যাসিলিটেটর-এর কথা বলার ভঙ্গি সহজ ও সাবলীল হতে হবে এবং কথা বলার সময় মুখে স্বাভাবিক অভিব্যক্তি বজায় রাখতে হবে। অংশগ্রহণকারীরা ফ্যাসিলিটেটর-এর কথা শুনছেন কিনা এবং শুনে বোঝার চেষ্টা করছেন কিনা সেদিকেও তাকে খেয়াল রাখতে হবে।
 
পর্যবেক্ষণের দক্ষতা: অংশগ্রহণকারীদের অঙ্গভঙ্গির দ্বারা তাদের অনুভূতি বুঝতে হবে এবং সে মোতাবেক কাজ করতে হবে। যেমন, তারা যদি হাস্যজ্জ্বল থাকে তবে ধরে নিতে হবে তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছে; আবার কেউ যদি ঘড়ির দিকে তাকাতে থাকে তবে বুঝতে হবে সে বিরক্তি অনুভব করছে এবং কেউ যদি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রশ্ন করে তবে বুঝতে হবে সে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছে এবং এবিষয়ে আরও জানতে চাচ্ছে।
 
প্রশ্নকরার দক্ষতা: অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় জানা প্রয়োজন, তা হচ্ছে- পরিষ্কার, গোছানো এবং সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা, এমন প্রশ্ন করা যাতে তাদের কৌতূহলের উদ্রেক হয়, বিষয়টি সর্ম্পকে ভাবতে তাদের উৎসাহিত করে এবং অংশগ্রহণকারী যুক্তিপূর্ণ উত্তর দিতে পারেন।
 
এক্ষেত্রে দুটি পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে। প্রথমত অংশগ্রহণকারীদের স্বেচ্ছায় কোন প্রশ্নের উত্তর দেওযার সুযোগ দেয়া অথবা ফ্যাসিলিটেটর-এর যদি জানা থাকে অংশগ্রহণকারীদের কেউ বিষয়টি সর্ম্পকে জানেন তবে তাকে বলতে বলা।
 
উত্তর দেয়ার দক্ষতা: অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে তিনটি পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে। নিজেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়া; প্রশ্নকারীকেই অথবা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্য কাউকে প্রশ্নটির উত্তর দিতে উদ্বুদ্ধ করা অথবা পরিস্থিতি অনুযায়ী ’প্রশ্নটি আলোচ্য বিষয়ভুক্ত নয়,’  ‘পরবর্তীতে উত্তর দেয়া হবে’জাতীয় কিছু বলা।
 
ফলপ্রসূ উপস্থাপনার একটি মূল ভিত্তি হচ্ছে অংশগ্রহণকারীদের অবশ্যই জানা দরকার (essential to know) এমন তথ্যের ওপর ফোকাসটা কেন্দ্রীভূত রেখে তবেই অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করা যাতে প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার মূল বিষয়বস্তু অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ভীড়ে হারিয়ে না যায়। এজন্য প্রয়োজন একটি সঠিক ‘সেশন পরিকল্পনা’আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস: প্রাকটিস, প্রাকটিস এবং প্রাকটিস!

স্প্রিংবোর্ড- বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য যোগাযোগ পেশাজীবীদের একটি মিলনমেলা

স্বাস্থ্য যোগাযোগ পেশাজীবীদের যোগাযোগ, ধারণা ও তথ্য বিনিময় এবং স্বাস্থ্য যোগাযোগ চর্চার উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে জানার ক্ষেত্রে স্প্রিংবোর্ড হচ্ছে একটি সার্বজনীন অনলাইন প্লাটফর্ম।
 
ইউএসএআইডি-এর সহায়তায় একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প দি হেলথ কমিউনিকেশন ক্যাপাসিটি কোলাবরেটিভ (এইচসি৩) স্প্রিংবোর্ড তৈরি করেছে যার মাধ্যমে স্বাস্থ্য যোগাযোগ পেশাজীবীগণ তাদের দক্ষতা তৈরি এবং উন্নয়নে উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োগে অবদান রাখতে পারেন।
 
এশিয়ায় প্রথম কান্ট্রি চ্যাপ্টার হিসেবে ঢাকায় ২০১৪ সালের ৮ মে বাংলাদেশ হেলথ কমিউনিকেশন স্প্রিংবোর্ডের যাত্রা শুরু হয়। ২৩৯ সদস্য সংখ্যা নিয়ে সাফল্যজনক যাত্রা শুরুর পরবর্তী প্রচেষ্টা ছিল সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা্, এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশন প্রভৃতিতে বাংলাদেশ স্প্রিংবোর্ডকে পরিচিত ও জনপ্রিয় করা। স্প্রিংবোর্ড পরিচিতি এবং জনপ্রিয়করণ কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যম ও পন্থা অবলম্বন করে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট ও সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য বিষয়ে (যেমন- এনসিডি, মাতৃ-শিশুস্বাস্থ্য, সিওপিডি, পরিবার পরিকল্পনা, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, এইচআইভি, জিকা, ইবোলা, এসডিজি, জলবায়ু পরিবর্তন, পুষ্টি ইত্যাদি সম্পর্কে) আলোচনা সৃষ্টিতে প্রচারণা কার্যক্রমগুলোর উপর জোর দেয়া হয়েছে। উপযুক্ত/সঠিক সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সংবাদপত্র, সাময়িকী, ম্যাগাজিন এবং গবেষণা সাময়িকী থেকে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা এবং জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য/সংবাদ খোঁজার জন্যে নব নব উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা যুক্ত করা হয়েছিল। অন্যান্য প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়/ফ্যাকাল্টির শিক্ষার্থী, সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ, স্বাস্থ্যবিষয়ক এনজিও গবেষক এবং যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও এডভোকেসি/নীতি-নির্ধারকদের নিকট ইমেল প্রেরণ; স্প্রিংবোর্ড জব/ইভেন্ট পৃষ্ঠায় স্থানীয় জব পোস্টিং প্রদান; ডিএইচএস/হেলথ বুলেটিন/ডিজিস প্রোফাইলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন স্প্রিংবোর্ড প্লাটফর্মে সংরক্ষণ; ডিরেক্টরি পেজে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার পরিচিতি তুলে ধরা এবং স্প্রিংবোর্ড মোবাইল এপ্লিকেশন ডাউনলোড লিংক বিভিন্ন সোশ্যাল, প্রফেশনাল মিডিয়ায় পর্যায়ক্রমে অবহিত করা উল্লেখযোগ্য।  
 
এশিয়া অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য অবস্থার উন্নয়নের লক্ষে  আঞ্চলিক দেশগুলোর নিজস্ব  স্প্রিংবোর্ড গঠন ও সহায়তার উদ্দেশ্যে  এবং দেশসমূহের এসবিসিসি পেশাজীবীগণের দক্ষতা তৈরী ও উন্নয়নে এইচসি৩ এশিয়া স্প্রিংবোর্ড সচিবালয় হিসেবে বিসিসিপিকে দায়িত্ব প্রদান করে। কান্ট্রি স্প্রিংবোর্ড গঠনে ও সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যেমন- নেপাল ও ভারতের উন্নত নেটওয়ার্ক অবকাঠামো তৈরির  উদ্দেশ্যে তাদের সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতা করা হয়। এশিয়া অঞ্চলের স্প্রিংবোর্ড সচিবালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম হিসেবে এইচসি৩ দ্বারা পরিচালিত গ্লোবাল ওয়েবিনার সমূহে অংশগ্রহণ, আঞ্চলিক ওয়েবিনারসমূহ আয়োজন  এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দেশগুলোতে যোগাযোগ বিনিময়ের অভিজ্ঞতা, ধারণা ও পরিকল্পনা  শেয়ার করতে  দ্বি-সাপ্তাহিক  অনলাইন মিটিং উল্লেখযোগ্য ।
 
এশিয়া অঞ্চলের দেশসমূহের স্বাস্থ্য পেশাজীবী সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশের সহায়তায় এবং এসবিসিসি পেশাভিত্তিক দক্ষতা তৈরী ও উন্নয়নে সাহায্য করতে বিসিসিপি তার সংযোগের পাঠকসমাজকে বাংলাদেশ হেলথ কমিউনিকেশন স্প্রিংবোর্ড-এ নিবন্ধিত হয়ে দেশ এবং দেশের বাইরের সকল জনস্বাস্থ্য যোগাযোগ অনুশীলনকারী, বিশেষজ্ঞ এবং পেশাজীবিগণকে সংযুক্ত থাকতে এবং মত বিনিময় ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল কর্মশালায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে পরস্পরকে সমৃদ্ধ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ।
 
স্প্রিংবোর্ড প্লাটফর্মে নিবন্ধন করতে  প্রদত্ত লিংক  https://healthcomspringboard.org/register-for- springboard/ অনুগ্রহ করে পরিদর্শন করুন এবং আপনার সদস্যপদ নিশ্চিত করতে পরবর্তী লিংকে https://healthcomspringboard.org/groups/bangladesh-health- communication-springboard/  গিয়ে “Join Group” বাটনে ক্লিক করে Bangladesh গ্রুপে যোগ দিন।

আইপিসি/বিসিসি, কমিউনিটি মবিলাইজেশন ও আউটরিচ কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি

বিসিসিপি গত ২৬ জুলাই থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, মুন্সীগঞ্জ ও রাজশাহী অঞ্চলে ৫টি ব্যাচের মাধ্যমে আইপিসি/বিসিসি, কমিউনিটি মবিলাইজেশন ও আউটরিচ কার্যক্রম সম্পর্কিত ৩ দিনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এই প্রশিক্ষণে ২৫টি পিএ এনজিও থেকে মাঠপরিদর্শক, কাউন্সিলর ও প্যারামেডিক এবং ১১টি পিআইইউ থেকে কোয়ালিটি অ্যাসুয়ারেন্স কর্মকর্তাসহ মোট ১৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন।
 
এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল কার্যকরী কাউন্সেলিং সেশন ও আউটরিচ কার্যক্রম পরিচালনায় কাউন্সিলর ও মাঠপরিদর্শকের আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি; কাউন্সেলিং সেশনগুলোতে কীভাবে বিভিন্ন যোগাযোগ উপকরণ ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের অবহিত করা; এবং স্থানীয় পর্যায়ে ক্যাম্পেইন কার্যক্রম আয়োজনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন টুলস ও কৌশল নির্ধারণে প্রশিক্ষণ।
 
এই সকল প্রশিক্ষণগুলোতে ইউপিএইচসিএসডিপি থেকে জনাব সাবিরুল ইসলাম, উপ-প্রকল্প পরিচালক (প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ) ও জনাব নুরুল আবছার, উপ-প্রকল্প পরিচালক (অর্থ); এবং খুলনা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন হতে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এলাকায় সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সাথে ব্যাপক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা বৃদ্ধি এবং ক্লায়েন্টদের রংধনু ক্লিনিক থেকে প্রদত্ত সেবা সম্পর্কে ব্যাখ্যার উপরে জোর দেন, যেন শহরবাসী উচ্চ হারে এ সকল ক্লিনিক থেকে সেবা নিতে আগ্রহী হন।
 
বিসিসিপি’র টেকনিক্যাল অফিসারগণ যোগাযোগ, আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ, আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ, কাউন্সেলিং, বিসিসি উপকরণ ব্যবহার ইত্যাদির উপর বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন। এ সকল সেশনগুলোতে অংশগ্রহণকারীগণ সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া বিসিসিএম ফার্মের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং স্পোশালিস্ট প্রশিক্ষণে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেন।
 

বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সামগ্রিক সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ কর্মকৌশলপত্র-এর মোড়ক উন্মোচন

স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতের জন্য তৈরি বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সামগ্রিক সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ কর্মকৌশলপত্র (National Comprehensive Social and Behavior Change Communication-[SBCC] Strategy) গত অগাস্ট ৩০, ২০১৬ তারিখে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়। বাংলাদেশ নলেজ ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বিকেএমআই) প্রজেক্টের কারিগরী সহায়তায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, বিকেএমআই যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে জনস হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগামস, বাল্টিমোর ইউএসএ এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস (বিসিসিপি)।
 
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় উন্নয়ন এবং দাতা সংস্থা থেকে অংশগ্রহণকারী এসবিসিসি পেশাজীবি ও নীতিনির্ধারকদের উপস্থিতিতে পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্বস্বাস্থ্য) জনাব রোক্সানা কাদের ও যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য-২) জনাব মোঃ আব্দুল মালেক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (অসংক্রামক রোগ) ডাঃ ফারুক আহমেদ ভূঁইয়াকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মকৌশলপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন।
 
অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, জনাব রোক্সানা কাদেরের নেত্রীত্বে গৃহীত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের এই উদ্দ্যেগের প্রশংসা করেন। তিনি বিকেএমআই, সিসিপি এবং বিসিসিপিকে সার্বক্ষনিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান ।
 
স্বাগত ভাষণে অতিরিক্ত সচিব জনাব রোক্সানা কাদের উল্লেখ করেন যে, স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাত উন্নয়ন কর্মসূচি ২০১১-১৬-এর মধ্যবর্তী রিভিউ’ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সামগ্রিক এসবিসিসি কর্মকৌশলপত্র বা  স্ট্রাটেজীটি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে সমগ্র বাংলাদেশে উচ্চমান সম্পন্ন এবং অধিকতর কার্যকর এসবিসিসি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এই স্ট্রাটেজী প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব বা মডেলভিত্তিক, পরস্পরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সমন্বয়কারী এবং উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য উপযোগী এসবিসিসি কার্যক্রম তৈরির ক্ষেত্রে পথনির্দেশকের কাজ করবে।” তিনি বলেন যে, এই স্ট্রাটেজী তৈরির ক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।
 
ইউএসএআইডি কর্তৃক অর্থায়নকৃত বাংলাদেশ নলেজ ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বিকেএমআই)-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জনাব কাদের বলেন বিকেএমআই এই স্ট্রাটেজীর ধারণাপত্র তৈরি করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় উন্নয়ন সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিকে সম্পৃক্ত করে এই স্ট্রাটেজী তৈরি করা এবং ছাপানোর দুরূহ কাজটি সম্পন্ন করেছে। এই কাজে সময় দেয়া ও অবদান রাখার জন্য তিনি সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান।
 
মুক্ত আলোচনা পর্বে বিভিন্ন অংশীজন তাদের মতামত ও অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন পরবর্তী স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাত-উন্নয়ন কর্মসূচি চূড়ান্ত করার আগ দিয়ে এই স্ট্রাটেজী প্রণয়ন ও প্রচার করা একটি অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। বাংলাদেশের এসবিসিসি কার্যক্রমকে আরো উন্নত করার ক্ষেত্রে এই স্ট্রাটেজী প্রভূত ভূমিকা রাখবে।
 
বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সামগ্রিক সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ কর্মকৌশলপত্রটি তৈরিতে বিকেএমআই প্রজেক্ট কারিগরি সহায়তা প্রদান করে। মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় এবং আন্তঃর্জাতিক পর্যায়ের বেসরকারি সংস্থা, দাতাগোষ্ঠী এবং  সংবাদ মাধ্যমের  প্রায় ১০০ জন ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

‘ই-জিপি সিস্টেমে ব্যাংকের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ’ শীর্ষক সেমিনার

গত ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে ‘ই-জিপি সিস্টেমে ব্যাংকের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ’ শীর্ষক এক সেমিনার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট-২ (২য় সংশোধিত)-এর অধীনে বিসিসিপি’র কারিগরি সহায়তায় সিপিটিইউ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
 
এ সেমিনারের উদ্দেশ্য ছিল ই-জিপি সিস্টেমে টেন্ডারারদেরকে পেমেন্ট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের সার্ভিস চার্জের সুষমকরণ ও সেবা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সুপারিশ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। ক্রয়কারী সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, ঠিকাদার, সিপিটিইউ-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ ৪২টি ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকগণ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জনাব এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ঢাকায় অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব চিমিয়াও ফেন। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহম্মদ শামস্-উল ইসলাম এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মুহাম্মদ আলী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
 
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমই বিভাগের সচিব জনাব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।
 
সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন সেমিনারের উদ্বোধন করেন এবং মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্টের সকল ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনলাইনভিত্তিক ই-টেন্ডারিং পদ্ধতির আওতায় আসবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
 
মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী ই-জিপি পদ্ধতির বাস্তবায়ন ও উন্নয়নের জন্য নিরলস সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা স্মরণ করেন। তিনি ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের ক্ষেত্রে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও টেকসই করার প্রচেষ্টা হিসেবে নিম্নহারে কর্পোরেট ঋণসুদের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেন।
 
আইএমই বিভাগের সচিব জনাব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বর্তমান সময় পর্যন্ত ই-জিপির উন্নয়ন সম্পর্কে বলেন। তিনি বলেন যে, ৪৫০টি সংস্থা ই-জিপির আওতায় এসেছে। ২৩,৭৬৩ ঠিকাদার নিবন্ধিত হয়েছেন এবং ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ৬৩,২৬৭টি দরপত্র জমা পড়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ১২৩৩টি ক্রয়কারী সংস্থা ই-জিপির আওতায় আসবে।
 
উল্লেখ্য, সেমিনারে মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী সরকারি ক্রয় বিষয়ক সিপিটিইউ মোবাইল অ্যাপটি উদ্বোধন করেন। নিম্নোক্ত ঠিকানায় মোবাইল অ্যাপটি পাওয়া যাবে:
 
http://cptu.gov.bd/mobapp.aspx অথবা https://play.google.com/store/apps/details?id=com.cptu