logo

সম্পাদকীয়

কৌশলগত যোগাযোগ তার আগেকার ‘প্রচারণা সহায়ক’ একটি অবস্থান থেকে ‘অপরিহার্য’ একটি অবস্থানে পরিণত হয়েছে। যেকোনো কার্যক্রমের উদ্দেশ্য ও সুফল সার্থকভাবে তুলে ধরতে কৌশলগত যোগাযোগের গুরুত্ব ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, আর তাই এর সফল প্রয়োগ হয়ে দাঁড়িয়েছে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের এক আবশ্যিক চাবিকাঠি। 
 
এ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর যোগাযোগ পদ্ধতি প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই। নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে উপযুক্ত ও কার্যকর যোগাযোগ পদ্ধতি অনুসরণ করা গেলেই তা অর্জনের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ফলাফল অর্জনে এর প্রভূত সুবিধা ও কার্যকারিতার কথা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম্স বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজ করে চলেছে। 
 
সামাজিক উন্নয়নে আমরা ভবিষ্যতেও কৌশলগত যোগাযোগকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে সংকল্পবদ্ধ।

স্টুডেন্ট লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপস - চট্টগ্রামে আশার আলো

কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সাথে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা সময় কাটানোর করার পরে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে পোস্ট করা একজন স্টুডেন্ট ম্যানেজারের মন্তব্য- আমাকে নিজেকে বলতে একটি মুহূর্ত নিতে হয়েছিলো যে, ‘স্টুডেন্ট লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কশপস (এসএলডিডব্লিউ) কার্যক্রমটি এই প্রজন্মের মনের মধ্যে একটি গতির সঞ্চার করেছে’। এক বছর আগে চট্টগ্রামে এসএলডিডব্লিউ আয়োজন করা হয়েছিলো। এই কর্মসূচি একটি ব্যাপক আবেদন তৈরি করেছে এবং স্টুডেন্ট ও পুলিশ একত্রিত হয়ে সমাজে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার জন্য যুব সমাজের আত্মার কাছে পৌঁছেছে। কর্মসূচিটি শেষ হওয়ার পরেও স্টুডেন্ট অংশগ্রহণকারীরা পুলিশের সাথে একটি সুসম্পর্কপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলো। যার ফলস্বরূপ একটি কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। 
পুলিশের সাথে সংযুক্ত হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের প্রধান উপায় হবে এই ফোরাম। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে- ইভটিজিং, মাদকের সাথে জড়িত হওয়া, চরমপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি সম্পর্কিত আইন সম্পর্কে অনেক তরুণ-তরুণী মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে চায়; কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা না থাকার কারণে এটি সর্বদা কার্যকর করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যারা ভাবেন সমাজ উন্নত এবং পরিচ্ছন্ন/পরিমার্জিত হোক আসলে সেই সকল ব্যক্তিদের সহযোগিতা করার লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম স্থাপিত হয়েছে। ফোরাম কার্যকর হওয়ার পর যারা সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে চান তারা ফোরামের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যার মাধ্যমে সম্প্রদায়ের সক্রিয় সামাজিক নেতা এবং পুলিশ প্রতিনিধি তাদের সমর্থন দিতে পারেন। যদি পুলিশের সহযোগিতা থাকে তবে যেকোনো কার্যক্রম মসৃণভাবে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। কারণ তাহলে মানুষ এই বিষয়টিকে আগের চেয়ে আরো বেশি গুরুত্বসহকারে নিবে।
 
সম্প্রতি এসএলডিডব্লিউ’র স্টুডেন্ট অংশগ্রহণকারী ও পুলিশ মিলে কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে একটি বিশাল জনসমাগমের আয়োজন করতে সহযোগিতা করে এবং এটি সমাজের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার জন্য করা হয়েছে। এই জনসমাগমে প্রচুর মানুষ উস্থিত হয়েছিলো, ফলে সমগ্র শহরেই এর প্রভাব পড়েছিলো। এখানে মাদকের নেতিবাচক বিষয় (প্রভাব) তুলে ধরে যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য যারা মাদকের সাথে সম্পর্কিত তাদের প্রত্যাখ্যান করার জন্য জনসমাগমে আগত মানুষদের প্রতি আহবান  জানানো হয়। যারা মাদকাসক্ত তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া এবং কাউন্সেলিং ও পুনর্বাসন করার মাধ্যমে কিভাবে তাদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা যায় এই বিষয়গুলোর প্রতি এখানে জোর দেয়া হয়েছিলো।

এমন ফোরাম কিভাবে মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্য তাদের মতামত তুলে ধরেন। অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য প্রদানে এই ফোরাম আগের চেয়ে আরো বেশি সহযোগিতা করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে এই ফোরাম অপরাধ তদন্তের সময় পুলিশকেও সাহায্য করে। পাশাপাশি মাদককে দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলতে এবং যেকোনো উগ্রবাদের সাথে সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে আহবান  জানান। পুলিশ প্রতিনিধি এসএলডিডব্লিউ প্রোগ্রামের আয়োজক যারা পুলিশ এবং ছাত্রদের মাঝে এই অনন্য বন্ধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে দিয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 
 
বিসিসিপি আশা করে, চট্টগ্রামের যুবসমাজের উপর এসএলডিডব্লিউ কার্যক্রমটি ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়েছে- তা বহু বছরে ধরে টিকে থাকবে ও সমাজে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো দেখা যাবে।

এইচপিএন কর্মসূচি ও এর উত্তম প্রভাব অর্জনের লক্ষ্যে প্রণোদনা ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে এসবিসিসিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে

এইচপিএন কর্মসূচি ও এর উত্তম প্রভাব অর্জনের লক্ষ্যে প্রণোদনা ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে এসবিসিসিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে 
জনাব মোঃ আসাদুল ইসলাম, সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ 
 
এইচপিএন এসবিসিসি কৌশল সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি’র ১ম সভা বিগত ০৫ মে ২০১৯ তারিখ অপরাহ্ন ০৩-০০ টায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জনাব মোঃ আসাদুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সদস্য হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে জনাব মোঃ হাবিবুর রহমান খান, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্বস্বাস্থ্য), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ; জনাব কাজী আ.খ.ম. মহিউল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জনসংখ্যা, পরিবার কল্যাণ ও আইন), স্বাস্থ্য  শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ; জনাব সুশান্ত কুমার সাহা, মহাপরিচালক, নিপোর্ট; মিজ্‌ পারভিন আক্তার, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ; ডাঃ মোঃ শাহনেওয়াজ, মহাপরিচালক, বিএনএনসি; জনাব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, যুগ্ম-সচিব (নগর উন্নয়ন-২ অধিশাখা), স্থানীয় সরকার বিভাগ; ডাঃ এ মোঃ মহিউদ্দিন ওসমানী, যুগ্মপ্রধান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ইউনিটসমূহের লাইন ডিরেক্টর, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিগণও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
সভায় উপস্থাপিত বার্ষিক এইচপিএন এসবিসিসি মনিটরিং রিপোর্ট ২০১৭-১৮ কে দেশে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগী  কর্তৃক পরিচালিত ও বাস্তবায়িত এসবিসিসি কার্যক্রমের ব্যাপ্তি, মাধ্যম প্রবণতা ও ভৌগলিক বিস্তারের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরার গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস হিসেবে জোর দেয়া হয়। এইচপিএন কর্মসূচি ও এর উত্তম প্রভাব অর্জনের লক্ষ্যে প্রণোদনা ও প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় এসবিসিসিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার জন্য সভার সভাপতি ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জনাব মোঃ আসাদুল ইসলাম সকলকে আহ্বান জানান। তিনি কর্মসূচির ফলাফল পরিমাপে এই রিপোর্টটিকে একটি নির্দেশনামূলক দলিল আখ্যা দিয়ে এই রিপোর্ট প্রণয়নে সহায়তা প্রদানের জন্য ইউএসএআইডি উজ্জীবন এসবিসিসি প্রজেক্ট ও দাতা সংস্থা ইউএসএআইডিকে ধন্যবাদ জানান।
 

‘কৌশলগত স্বাস্থ্য যোগাযোগে নেতৃত্ব’শীর্ষক কর্মশালা

বিগত ২৮-৩০ এপ্রিল ২০১৯ কক্সবাজারে হোটেল রয়েল টিউলিপে ‘কৌশলগত স্বাস্থ্য যোগাযোগে নেতৃত্ব’ শীর্ষক এক এসবিসিসি বিষয়ক উচ্চতর কৌশলগত নেতৃত্ব কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ইউএসএআইডি উজ্জীবন এসবিসিসি প্রজেক্ট আয়োজিত ৩ (তিন) দিনব্যাপি এই কর্মশালায় মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বিভাগীয় সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, উপসচিব লাইন ডিরেক্টর, এলএন্ডএইচইপি, সিনিয়র সহকারী সচিব ও সহকারী পরিচালক পর্যায়ের মোট ২৬ (ছাব্বিশ) জন কর্মকর্তা এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। 
 

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ডা. কাজী মোস্তফা সরোয়ার। সভাপতিত্ব করেন জনাব কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জনসংখ্যা, পক ও আইন), স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। মি. প্যাট্রিক এল কোলম্যান, চিফ অব পার্টি, ইউএসএআইডি উজ্জীবন  এসবিসিসি প্রজেক্ট ও জনাব মোঃ শাহজাহান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিসিসিপি এই কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
 

এসবিসিসি কার্যক্রমের সফল ও কার্যকর বাস্তবায়নে কর্মশালায় ৪ টি মূল ভাব (Theme) অর্থাৎ ১) স্ট্র্যাটেজিক লিডারশীপ মাইন্ডসেট, ২) অ্যাডভোকেসি এন্ড পলিসি চেঞ্জ, ৩) পাওয়ার অফ কোঅর্ডিনেশন এবং ৪) অপারেশনাল ইফেক্টিভনেস - এর উপর ১০টি  আনুষ্ঠানিক অধিবেশন সঞ্চালন করা হয়। ইউএসএআইডি উজ্জীবন এসবিসিসি প্রজেক্ট ছাড়াও এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন সচিব জনাব ম. ম. রেজা, চ্যলেঞ্জ টিবি’র পরামর্শক ডা. এ জে ফয়সল কর্মশালার অধিবেশন পরিচালনা করেন। নির্ধারিত অধিবেশনে অংশগ্রহণকারীগণ ‘কৌশলগত স্বাস্থ্য যোগাযোগে নেতৃত্ব’ বিষয়ে স্ব স্ব ধারণা ও অভিব্যাক্তি প্রকাশ করেন। কর্মশালার শেষে অংশগ্রহণকারীগণ এই কর্মশালা লব্ধ ধারণা ও জ্ঞান দ্বারা স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রের বর্তমান অবস্থার উন্নয়নে কী ভূমিকা নিবেন সে বিষয়ে তাঁদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।