logo

সম্পাদকীয়

প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বিশ্ব এগিয়ে চলেছে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। আর এক্ষেত্রে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বর্তমান ই-সংযোগ। সমাজ উন্নয়ন, শিক্ষা ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রভৃতি বিষয়ে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। আধুনিক যোগাযোগ কৌশলে তাই বিসিসিপি তার কার্যক্রমকে গতিশীল করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি)-এর উপর জোর দিয়েছে। আর তাই বিসিসিপির জনস্বাস্থ্য ও সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক কার্যক্রমে আইসিটি গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে এবং কার্যক্রম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে এর ব্যবহার ধীরে ধীরে ব্যাপকতা লাভ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।

আমরা মনে করি বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের পথে সংযোগের ই-ভার্সান আমাদের তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে সমৃদ্ধ করেছে। পাঠক ই-সংযোগ সহজে দেখতে ও পড়তে পারছেন এটাই আশার কথা।

শুভকামনা।

ইউপিএইচসিএসডিপি’র বিসিসিএস বিষয়ক বেসলাইন জরিপের তথ্যসমূহের উপর অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ ও বিপণন (বিসিসিএম)বিষয়ক বেসলাইন জরিপের তথ্যসমূহ সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভা গত ২৩ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। যা বিসিসিপি’র তত্ত্বাবধানে ‘অর্গ-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড’ পরিচালনা করে। এই জরিপের উদ্দেশ্য ছিল স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আচরণগুলোর বিভিন্নতা বিষয়ে বিদ্যমান জ্ঞান ও চর্চা নিরূপণ করাসহ ইউপিএইচসিএসডিপি’র রংধনু ক্লিনিকের সেবাসমূহ প্রচারণার মাধ্যমে ব্রান্ডের স্বীকৃতি এবং কার্যক্রমসমূহ উৎসাহিত করা।

এই অবহিতকরণ সভায় পিএমইউ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ৪টি পিআইইউ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, ২৫টি পিএ ইউনিটের সকল প্রকল্প ব্যবস্থাপক, ইউপিএইচসিএসডিপি’র সাথে কর্মরত কনসালটিং ফার্মের প্রতিনিধিগণ এবং সংশ্লিষ্ট দাতা সংস্থার প্রতিনিধিসহ মোট ৭৫ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। বেসলাইন জরিপ সংক্রান্ত বিসিসিএম-এর তথ্যসমূহের উপর প্রতিবেদনটি অর্গ-কোয়েস্ট-এর প্রতিনিধিগণ তৈরি করেন।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (এমআইএ) মিস জুয়েনা আজিজ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জনাব ধীরাজ কুমার নাথ, স্টাফ কনসালট্যান্ট (নগর স্বাস্থ্য), বিআরএম, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক এবং ডা. রফিকুস সুলতান, প্রজেক্ট টেকনিক্যাল অফিসার, ইউএনিএফপিএ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় ইউপিএইচএসডিপি’র প্রকল্প পরিচালক, জনাব আবু বকর ছিদ্দীক সভাপতিত্ব করেন।

মিস সোনিয়া ইসলাম, মার্কেটিং কনসালটেন্ট, বিসিসিএম কম্পোনেন্ট স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং বিসিসিএম কম্পোনেন্টের টিম লিডার মিস ইয়াসমীন খান সংক্ষিপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিসিসিএমবিষযক সামগ্রিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। বিসিসিপির উপ-পরিচালক (গবেষণা ও মূল্যায়ন) ড. কপিল আহমেদ উপস্থিত কর্মকর্তা ও অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেন এবং প্রতিবেদন ও আলোচনার সংক্ষিপ্ত সারনির্যাস তুলে ধরেন। সবশেষে সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে অবহিতকরণ সভাটি শেষ হয়।

স্বাস্থ্য শিক্ষা আদর্শ গ্রাম বা মডেল ভিলেজ গতিশীলকরণ

স্বাস্থ্য শিক্ষা আদর্শ গ্রাম বা মডেল ভিলেজ কার্যক্রমটি স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো (বিএইচই)-এর অন্যতম একটি  প্রধান উদ্যোগ। বাংলাদেশের সব জেলাতেই মডেল ভিলেজ স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় দুটি করে আদর্শ গ্রাম রয়েছে। এই আদর্শ গ্রামগুলো ২৩টি বিসিসি নির্দেশকের মাধ্যমে ১১টি স্বাস্থ্য তথ্য জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করে।  আদর্শ গ্রামের উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্য শিক্ষার নানাবিধ কৌশল ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ও টুল ব্যবহার করে একটি আদর্শ স্থান তৈরি করা। এর ফলে জনসাধারণ যেন নিজের চেষ্টায় নিজেদের স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং সেই স্থানকে স্বাস্থ্য শিক্ষার পরিদর্শন এলাকা হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। 
 
গত কয়েক বছর ধরে সঠিক দিক নির্দেশনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মডেল ভিলেজের কার্যক্রম কিছুটা মন্থর  হয়ে গেছে।  বাংলাদেশ নলেজ ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বিকেএমআই) প্রজেক্ট সম্প্রতি পর্যায়ক্রমে মডেল ভিলেজেগুলোর উন্নয়নে বেশ কয়েকটি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে । প্রথম ধাপে, স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আচরণ পরিবর্তনে যোগাযোগ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে ৩০টি জেলার মডেল ভিলেজ সংশ্লিষ্ট ৮৭ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক (এএইচআই) এবং স্বাস্থ্য সহকারীকে (এইচআই) ৩ দিনব্যাপী আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ (আইপিসি) বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
 
পরবর্তীতে মডেল ভিলেজের উন্নয়নে বিকেএমআই মাঠ পর্যায়ে ৩টি কৌশল অবলম্বন করে- (ক) আদর্শগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটি নতুনভাবে তৈরি করা; (খ) মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে মায়েদের জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা এবং স্থানীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন তৈরি করা; এবং (গ) স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
 
উপরোক্ত উদ্যোগের ফলাফল হিসেবে ১৩টি জেলায় ১৩টি কমিটি গতিশীল হয়, আদর্শগ্রামের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য ১৩টি কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করা হয়, ২১৮ জন মায়েদেরকে মা ও শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞান প্রদান করা হয় এবং ২০০০ প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে স্বাস্থ্য আচরণ অনুসরণ বিষয়ক ধারণা প্রদান করা হয়।
 
এই উদ্যোগের ফলে আদর্শ গ্রামের কমিটি সদস্যরা এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা বিশেষ করে মা ও স্কুল ছাত্রছাত্রীরা তাদের গ্রামের উন্নয়নে সংঘবদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে আদর্শগ্রামের কার্যক্রমগুলো সঠিকভাবে চলছে কিনা সেটা দেখার জন্য ফলোআপ কার্যক্রম চলছে। বিকেএমআই বিশ্বাস করে এ ধরনের উদ্দ্যোগ বাংলাদেশের সকল গ্রামকে আদর্শ গ্রামে পরিণত করতে সহায়তা করবে।
 
এখানে উল্লেখ্য যে, বিকেএমআই বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রমে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে থাকে যার মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো অন্যতম। সে সকল কার্যক্রমের মধ্যে মডেল ভিলেজের উন্নয়ন একটি।

সিআরপিএআরপি-এর ১০টি এফএসসি সম্পন্ন

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বন বিভাগ ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পার্টিসিপেটরী এফরেস্টেশন এন্ড রিফরেস্টেশন (সিআরপিএআর) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এবং প্রকল্পের স্ট্রাটেজিক কমউিনিকেশন পার্টনার হিসেবে বিসিসিপি বন ধ্বংস রোধে ও অংশীদারিত্বমূলক বন ব্যবস্থাপনায় উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী ও সাধারণ স্টেকহোল্ডারদের সচেতনতা বৃদ্ধি, আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগে সম্পৃক্তকরণ এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে এই প্রকল্পের স্ট্র্যাটেজিক কমউিনিকেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তারই ফলশ্রুতিতে বিসিসিপি উপকূলীয় এলাকার ৯টি জেলায় ১০টি ফিউচার সার্চ কনফারেন্স (এফএসসি) পরিচালনা করেছে। জেলাগুলো হলো কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা। উল্লেখ্য এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ২টি এফএসসি অনুষ্ঠিত হয়।
 
কনফারেন্সের উদ্দেশ্য হলো উপকূলীয় চরাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বন সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগিয়ে নতুন বন সৃষ্টির লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিরুপণ করা।
 
ফিউচার সার্চ কনফারেন্সে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সরকারের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম, এনজিও এবং উপকারভোগীগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল শ্রেনীর স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বনায়ন ও পুনর্বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।

যোগাযোগ বিষয়ক তথ্যাবলী

অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশন
 
অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশন এমন এক ধরনের যোগাযোগ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সংস্থার ভিতরে কর্মীদের মধ্যে এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে তথ্য, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা আদান-প্রদান করা হয়।
 
গুরুত্ব
 
উন্নয়ন কর্মসূচির পূর্বশর্ত হচ্ছে যোগাযোগ। তবে যোগাযোগ কর্মকাণ্ডে সাধারণত উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দেয়া হয়। উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ নিশ্চিত করা হলেও কর্মসূচির সেবা প্রদানকারীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্যে যথাযথ যোগাযোগ ও তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত না হলে তা কর্মসূচির জন্য কাঙ্ক্ষিত ফলাফল লাভে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশনের গুরুত্ব রয়েছে।  
 
প্রয়োজনীয়তা
 
প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কারণে একটি সংস্থার মধ্যে অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশন জোরদার করা উচিত, কারণ এটি- কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিভিন্ন বিষয়ে দায়িত্ব গ্রহণে উৎসাহিত করে, বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ঝুঁকি নেবার জন্য কর্মীদের ক্ষমতায়ন করে, সংগঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও মূল্যবোধকে পরিষ্কার ভাবে বুঝতে সহায়তা করে, দলে কাজ বা টিম ওয়ার্ক ধারণার প্রসার ঘটায় ও টিম ওয়ার্ক নিশ্চিত করে এবং কর্মীদের কার্যক্ষমতা/দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
 
মূল ধারণা
 
প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে কোনো সংস্থার অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশনকে জোরদার করা উচিত। আর এ জন্যে ৩টি মূল ধারণাকে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন-
 
এক, অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশন নিজেকে দিয়েই শুরু হয়
 
দুই, অন্যদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে চাইলে প্রথমে নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে এবং
 
তিন, যদি বিশ্বাস করেন যে আপনি পরিবর্তন আনতে পারবেন তবে নিশ্চয়ই তা পারবেন
 
সমস্যা
 
বিভিন্ন কারণে একটি সংস্থার মধ্যে অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশন ভালভাবে কাজ নাও করতে পারে অথবা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা মূলত যেসব কারণে সৃষ্টি হয়, সেগুলো হচ্ছে- সংস্থার প্রধান যদি তার অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে যথাযথ এবং যথেষ্ট তথ্য প্রদানে অনিচ্ছুক হয়, সংস্থার অন্যান্য সদস্যরা যখন নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ করে না, সদস্যদের মধ্যে সংস্থা সম্পর্কে যদি অঙ্গীকারের অভাব হয়, সংস্থার সদস্যগণ যদি অসাদুপায় অবলম্বন করে এবং সংস্থার প্রধান যদি গুজব বা ভুল ধরাণা যথাযথভাবে নিরসন করতে ব্যর্থ হয়।
 
উন্নয়ন
 
প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে গেলে অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশনের উন্নয়ন জরুরি। আর এ কাজটি করতে গেলে যা করতে হবে, তা হলো-
 
ক. কিছু বিষয় অবশ্যই নিয়মিত ভাবে কর্মীদের সাথে আলোচনা করা, যেমন-
 
- সংস্থার উদ্দেশ্য কী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মী সংস্থার উদ্দেশ্য পূরণে কীভাবে অবদান রাখতে পারবে
 
- প্রত্যেকের অবদান সংস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এ বিষয়টি তুলে ধরা এবং তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা
 
- সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার কাজ আরো ভালভাবে করার জন্য সংস্থার প্রধান কীভাবে তাকে সহায়তা করতে পারে
 
- কোন ভুল হয়ে গেলে তা কাটিয়ে ওঠার উপায় আলোচনা করা
 
- ব্যক্তিগত সমস্যার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করা
 
খ. বিভিন্ন বিষয়ে কর্মীদের/সহকর্মীদের মতামত শোনা
 
তবে তৃতীয় বিশ্বের পশ্চাৎপদ দেশগুলোতে একসময় অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশনকে গুরুত্ব দেয়া হতো না এবং এর চর্চাও তেমনভাবে দেখা যেত না। মূলত এসব দেশগুলোর পেশাজীবী গ্রুপ ও ব্যবস্থাপকদের মধ্যে এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ধারণার অভাব ছিল। কিন্তু বর্তমানে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে গিয়ে প্রতিটি উন্নয়ন সংস্থাই অর্গানাইজেশনাল কমিউনিকেশনের গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজেদের মধ্যে এর চর্চাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

নগর স্বাস্থ্যের প্রচারণায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্তকরণ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ইউপিএইচসিএসডিপি’র রংধনু ক্লিনিকের সেবাসমূহ প্রচারণার জন্যে গত ২১ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে Engaging Local Leaders in Promoting Urban Health শীর্ষক একদিনের একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার উদ্দেশ্য ছিল ওয়ার্ড কাউন্সিলদের ভূমিকা ও দায়িত্ব নির্ধারণের মাধ্যমে সম্ভাব্য সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে রংধনু ক্লিনিকের নগর স্বাস্থ্য সেবাসমূহের প্রচারণার ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করা। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারসহ মোট ৭৫ জন অংশগ্রহণকারী আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

ইউপিএইচসিএসডিপি’র প্রকল্প পরিচালক জনাব আবু বকর ছিদ্দীক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব গোকুল কৃষ্ণ ঘোষ ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: আবুল খায়ের মো: আব্দুল্লাহ; জানব গুরু প্রসাদ ঘোষ, উপ-পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা, খুলনা; খুলনা সিটি কর্পোরেশনের হেলথ্‌ স্টান্ডিং কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন হেলাল; খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি; এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দুজন প্যানেল মেয়র মিস রুমানা খাতুন ও জনাব শেথ হাফিজুর রহমান হাফিজ। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় ভারপ্রাপ্ত মেয়র জনাব মো: আনিসুর রহমান বিশ্বাস সভার সভাপতিত্ব করেন।  

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পিআইইউ-এর প্রোগ্রাম অফিসার ডা: স্বপন কুমার হালদার স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং বিসিসিএম কম্পোনেন্টের কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট মিস কান্তা দেবী আলোচনা সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন ও আলোচনা পরিচালনা করেন। জনাব মোল্লা শওকত হোসেন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, কেএমএসএস, পিএ-১ এবং জনাব মো: আব্দুর রাজ্জাক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, কেএমএসএস, পিএ-২, খুলনা সিআরএইচসিসি ও পিএইচসিসি হিসেবে পরিচিত রংধনু চিহ্নিত সেবাকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে প্রদত্ত সেবাসমূহের উপর একটি সংক্ষিপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট প্রতিবেদন তুলে ধরেন। যেখানে নগর স্বাস্থ্যের প্রচারণায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিদের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীগণ উন্মুক্ত আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ইউপিএইচসিএসডিপি’র সেবাসংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ উন্মুক্ত আলোচনা শেষে তাঁদের বক্তব্য প্রদান করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের উত্থাপিত প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেন। আলোচনা সভাটি সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

মেজারমেন্ট এন্ড একাউন্টেবিলিটি ফর হেলথ (এমএফরএইচ) কনফারেন্সে বিকেএমআই প্রজেক্টের অংশগ্রহণ

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) ইউনিটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ৩ দিনব্যাপী আঞ্চলিক কনফারেন্স “মেজারমেন্ট এন্ড একাউন্টেবিলিটি ফর হেলথ (এমএফরএইচ)”-এ বাংলাদেশ নলেজ ম্যানেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বিকেএমআই) প্রজেক্ট অংশগ্রহণ করে। কনফারেন্সটি গত ২৬-২৮ এপ্রিল ২০১৬ রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত কনফারেন্সটিতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ এবং লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়। কনফারেন্সটিতে বিভিন্ন সংস্থাগুলো তাদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক ডিজিটাল রিসোর্সগুলো বুথে প্রদর্শন করে।  বিকেএমআই প্রজেক্টের ডিজিটাল রিসোর্সগুলোর মধ্যে ছিল মাঠ কর্মীদের জন্য ইটুলকিট,  ইলানিং কোর্স, প্রোগ্রাম ম্যানেজারদের জন্য  ইটুলকিট,  ইলানিং কোর্স এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন ইউনিটের (স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এবং তথ্য, শিক্ষা ও উদবুদ্ধকরণ) ডিজিটাল আর্কাইভ।

বিকেএমআই প্রজেক্টের রিসোর্সগুলোর মধ্যে মাঠকর্মীদের জন্য ইটুলকিটটি স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং পুষ্টি বিষয়ক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক উপকরণ সম্বলিত একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি। এটি ক্লায়েন্ট কাউন্সেলিং-এর সময় মাঠকর্মীদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। কাউন্সেলিং-এর জন্য স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ে মাঠকর্মীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ইলার্নিং কোর্সটি খুবই উপযোগী। এই কোর্সটি বাংলায় তৈরি এবং এতে রয়েছে আটটি মডিউল। প্রোগ্রাম ম্যানেজারদের জন্য তৈরি ইটুলকিটটিতে আছে বিভিন্ন ধরনের গাইডলাইন, কারিকুলাম, জবএইড, কেস স্টাডিসহ অন্যান্য কার্যকরী টুল যা এসবিসিসি কার্যক্রম পরিকল্পনা, পরিচালনা এবং মূল্যায়নে সহায়ক। প্রোগ্রাম ম্যানেজারদের জন্য তৈরি ইলার্নিং কোর্সগুলো স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং পুষ্টি বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কার্যকরী। প্রোগ্রাম ম্যানেজারদের জন্য দুটি কোর্স রয়েছে। একটি হলো বার্তা ও উপকরণ তৈরি এবং আরেকটি হলো পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন। এই কোর্সগুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে। সংস্থার কার্যক্রম সংরক্ষণ এবং সমন্বয় জোরদার করার জন্য বিকেএমআই, বিএইচই, আইইএম এবং আইপিএইচএন ইউনিটের ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরিতে সহায়তা প্রদান করেছে।

৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটিতে কারিগরি সেশন, গোলটেবিল বৈঠক, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং প্ল্যানারী সেশন ছিল। ৩য় দিনে মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশে যে সকল কর্মসূচি রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য অতিথিদের মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। কনফারেন্সটিতে বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, ফিলিপাইন এবং দক্ষিন আফ্রিকার সরকারি এবং বেসরকারি কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

কনফারেন্সটি ইউএসএআইডি, ডব্লিউএইচও, জিআইজেড এবং এশিয়া ইহেলথ ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (এইএইচআইএন)-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয়।

বিটিসিআরএন-এর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন

গত ৩১ মে ২০১৬ তারিখে সমগ্র বাংলাদেশে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালন করা হয়। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করে। অন্যান্য সংস্থ্যার সাথে বাংলাদেশ টোবাকো কন্ট্রোল রিসার্চ নেটওয়ার্ক (বিটিসিআরএন)র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে যা জেএইচসিপিএইচ-বিসিসিপি তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে গঠিত হয়েছে। বিটিসিআরএন-এর সদস্যগণ এবং অন্যান্য তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীবৃন্দ র‌্যালিতে যোগ দিয়েছিলেন। র‌্যালির পরে মন্ত্রণালয় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়েতনে একটি সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে।

অন্যান্য সংস্থাসমূহের সাথে বিসিসিপি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের লবিতে একটি স্টলের আয়োজন করে। এটি সেখানে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কার্যক্রমগুলোর প্রদর্শন করে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ স্টল পরিদর্শন করেন এবং তাঁরা গবেষণা অনুদান কার্যক্রম ও বিটিসিআরএনসহ বিসিসিপি’র তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন। মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জনাব মোহাম্মদ নাসিম তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিসিসিপি’র উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বিসিসিপি বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৬-এর পোস্টার প্রণয়ন ও বিতরণে কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছিল। পোস্টারটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত বিশ্বব্যাপী থিম “Get Ready for Plain Packaging”-এর বাংলা সংস্করণ “সাদামাটা মোড়ক- তামাক নিয়ন্ত্রণে আগামী দিন” অনুসরণে প্রস্তুত করা হয়। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালনে ৬৪ জেলার সিভিল সার্জন অফিস এবং ব্লুমবার্গ ইনিশিয়েটিভস গ্রান্টিস্‌গণ বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে পোস্টারটি ব্যবহারে কাজ করেছিল।
 

ই-জিপি ডিজিটাল বিলবোর্ড স্থাপিত

বিসিসিপি কর্তৃক ই-জিপি প্রচারণার অংশ হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ইমপ্লিমেন্টেশন, মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন বিভাগ (আইএমইডি)-এর সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে ইলেক্ট্রনিক গর্ভনমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) ডিজিটাল বিলবোর্ডটি প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করে। পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব এএইচএম মুস্তাফা কামাল গত ২৭ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে ডিজিটাল বিলবোর্ডটি উদ্বোধন করেন।

মাননীয় মন্ত্রী জানান যে, সরকার তার সকল কার্যক্রম ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনতে চান।তিনি আরও যোগ করেন, “ডিজিটালাইজেশনের এটাই সময়।” বিলবোর্ডটি ই-জিপি সিস্টেমের আওতায় আহ্বানকৃত মোট দরপত্রের সংখ্যা এবং তার সম্ভাব্য মূল্য প্রদর্শন করে। এই তথ্য-উপাত্ত প্রতি মাসে হালনাগাদ করা হয়।

সিপিটিইউ-এর মহাপরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন; সিপিটিইউ, আইএমইডি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিসিপির সিনিয়র ডেপুটি ডাইরেক্টর ও পিপিআরপি-২-এর ডেপুটি টিম লিডার মিস খাদিজা বিলকিস।

ই-জিপি বিলবোর্ডটি নীতিনির্ধারকসহ জনগণ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য স্থাপিত হয়েছে যা ইলেক্ট্রনিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমের ক্ষেত্রে সচেতনতা ও সহায়তা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।