logo

সম্পাদকীয়

বিসিসিপি তার যাত্রার শুরু থেকে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমাজ উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আচরণ পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে চলেছে। সেই লক্ষ্যে ১৯৯৪ সাল থেকে বিসিসিপি প্রতি বছর Advances In Family Health and Social Communication Workshop সম্পন্ন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও অনুষ্ঠিত হলো ২১তম Advances In Strategic Communication Workshop যা ফেব্রুয়ারি ২৭-মার্চ ১০ তারিখ পর্যন্ত চলে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রতি বছর অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি, মতামত ও ফীডব্যাক বিবেচনার মাধ্যমে এই ওয়ার্কশপের সূচি ও পরিকল্পনার উন্নয়ন ও হালনাগাদ করা হচ্ছে। এবারের এডভান্সেস ওয়ার্কশপের উদ্দেশ্য ছিল অংশগ্রহণকারীদের সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ সম্পর্কে ধারণা, জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে একটি সুযোগ প্রদান করা। উপরন্তু কর্মশালায় অধিকতর আধুনিক যোগাযোগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন টুলস্ ও কৌশলের সাথে অংশগ্রহণকারীদের পরিচয় করানো হয়। সমাজ উন্নয়নের পথে অংশগ্রহণকারীগণ তাদের ব্যবহারিক জীবনে এর কার্যকর অনুসরণ করতে পারলে আমাদের শ্রম সার্থক বলে বিবেচিত হবে।

বিসিসিপি এ ধরনের কর্মশালার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে বিশেষ সহায়কের ভূমিকা পালন করে চলেছে। সংযোগ-এর বর্তমান সংখ্যায় Advances Workshop-সহ অন্যান্য প্রকল্পের সংবাদও গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছে।

সকলকে সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ।

সিআরপিএআরপি-এর ওয়েবসাইট বিষযক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পার্টিসিপেটরী এফরেস্টেশন এন্ড রিফরেস্টেশন প্রকল্প (সিআরপিএআরপি)-এর ওয়েবসাইট হালনাগাদ রাখা, বিভিন্ন তথ্য ও উপকরণ আপলোড করা এবং দৈনন্দিন রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বিসিসিপি। গত ১০ মার্চ, ২০১৬ তারিখে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বন বিভাগের আরআইএমএস ইউনিটে হাতেকলমে পরিচালিত এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ বন বিভাগ ও সিআরপিএআরপি-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। বিসিসিপি’র আইটি বিশেষজ্ঞ এবং ওয়েবসাইট প্রস্তুতকারক যৌথ ভাবে প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন।

এই ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে বাংলাদেশে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় কি ধরনের কার্যক্রম চলছে সে সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও সংবাদ সবার কাছে সহজলভ্য হবে। উপকূলীয় চরাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বন সংরক্ষণ করা এবং বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগিয়ে নতুন বন সৃষ্টি করাই সিআরপিএআরপি প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এই প্রকল্পের স্ট্র্যাটেজিক কমউিনিকেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বিসিসিপি। এই ওয়েবসাইটটি এই কার্যক্রমেরই একটি অংশ।

ওয়েবসাইটটি এই কার্যক্রমের আওতায় তথ্য ও সংবাদ সরবারহ করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে যা সিআরপিএআরপি’র অধীনে বাংলাদেশে অংশীদারিত্বমূলক পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বন ধ্বংস হ্রাসে ও বনায়ন বাড়াতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় কমিউনিটির দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি সিআরপিএআরপি’র প্রকল্প পরিচালক জনাব উত্তম কুমার সাহা এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের উপ-বনসংরক্ষক জনাব মোঃ জহির ইকবাল কর্তৃক সমাপ্তি সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয়। অন্যান্যদের  মধ্যে সিআরপিএআরপি’র যোগাযোগ ও তথ্য বিশেষজ্ঞ মিস আমব্রিন খান;  সিআরপিএআরপি’র এওয়ারনেস ক্যাম্পেইনের টিম লিডার মিস খাদিজা বিলকিস; এবং ডেপুটি টিম লিডার মিস কান্তা দেবী উপস্থিত ছিলেন।

শিশু উৎসব অনুষ্ঠিত

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় সহিংসতা থেকে শিশু সুরক্ষায় কমিউনিটির করণীয় শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিসিসিপি সম্প্রতি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে শিশু উৎসবের আয়োজন করে। এই শিশু উৎসবের উদ্দেশ্য ছিল বহুমূখী যোগাযোগ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে কমিউনিটির জনগণের দ্বারা শিশু সুরক্ষার কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা।

প্রধান অতিথি হিসেবে শিশু উৎসব উদ্বোধন করেন খুলনাস্থ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জনাব শেখ আব্দুল হামিদ। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব প্রফেসর আনোয়ারুল কাদির, নির্বাহী পরিচালক-সুন্দরবন একাডেমী; জনাব স্বপন কুমার গুহ, প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, রূপান্তর; মিস নার্গিস ফাতিমা জামিন, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, খুলনা; এবং জনাব আবুল আলম, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, খুলনা।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “প্রতিটি শিশুর বিকাশ, শিশুবান্ধব ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত এবং সহিংসতা থেকে শিশুর সুরক্ষায় কমউিনিটির করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যক্তি ও শিশু সংগঠনগুলোকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্টেকহোল্ডারগণ তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন যে, এর আগে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এমন সাফল্যমণ্ডিত শিশু উৎসব তারা দেখেননি। অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশে বর্তমান শিশু সুরক্ষার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচেনা করেন। উৎসবের শেষে অধিকাংশ শিশুই তাদের অনুভূতি বিনিময় করতে গিয়ে বলে, “আমরা আরো আনন্দিত হবো যদি শিশু উৎসবের সময় বৃদ্ধি করা হয়।”

শিশু উৎসবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, মহিলা অধিদপ্তর, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, ইউসেপ-বাংলাদেশ, জেজেএস, এমএসএসইউএস, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ব্র্যাক, শেখ রাসেল প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং লাইট-বাংলাদেশ-এর সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা অংশগ্রহণ করে। এই শিশুরা দেশাত্ববোধক গান, আধুনিক ও লোক সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি, কৌতুক, জীবনের গল্প বলা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করে।

সিআরপিএআরপি-এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্ট পার্টিসিপেটরী এফরেস্টেশন এন্ড রিফরেস্টেশন প্রকল্প (সিআরপিএআরপি)-এর ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক জনাব মোঃ ইউনুস আলী ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বন বিভাগ ও সিআরপিএআরপি প্রকল্পের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম এবং পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিতি ছিলেন।

এই ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে বাংলাদেশে জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় কি ধরনের কার্যক্রম চলছে সে সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও সংবাদ সবার কাছে সহজলভ্য হবে। উপকূলীয় চরাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বন সংরক্ষণ করা এবং বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগিয়ে নতুন বন সৃষ্টি করাই সিআরপিএআরপি প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

সিআরপিএআরপি-এর প্রকল্প পরিচালক জনাব উত্তম কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও সিআরপিএআরপি’র টাস্ক টিম লিডার জনাব শাকিল আহমেদ ফেরদৌসি। ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিস খাদিজা বিলকিস, সিনিয়র ডেপুটি ডাইরেক্টর, বিসিসিপি এবং টিম লিডার, স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম (এসসিপি), সিআরপিএআরপি।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশের বনের উপর জীবিকার জন্য নির্ভরশীলতা বাড়ছে। অপর দিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন: বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, খরা ইত্যাদি দেখা দিচ্ছে। এতে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে এবং প্রতিবেশ সেবার মান হ্রাস পেয়ে জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এসব প্রতিক্রিয়া মোকাবেলায় বাংলাদেশ বন বিভাগ এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরিশাল, পটুয়াখালি, বরগুনা ও ভোলা জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ রিজিলিয়েন্ট ফান্ড-এর অর্থায়নে এই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।

বিসিসিপি বন ধ্বংস রোধে ও অংশীদারিত্বমূলক বন ব্যবস্থাপনায় উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী ও সাধারণ স্টেকহোল্ডারদের সচেতনতা বৃদ্ধি, আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগে সম্পৃক্তকরণ এবং জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে এই প্রকল্পের স্ট্র্যাটেজিক কমউিনিকেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এই ওয়েবসাইটটি এই কার্যক্রমেরই একটি অংশ।

যোগাযোগ বিষয়ক তথ্যাবলী

নেতৃত্বের ৫টি শৃঙ্খলামূলক নির্দেশনা

কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটি সুবিন্যস্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণে নেতৃত্বের ধরন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন কার্যক্রম বিশেষ করে উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষেত্রে নেতৃত্বের সফলতায় পরিবেশ ও প্রতিবেশগত স্বচ্ছ ধারণা ও অর্জনে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা উচিত। সুতরাং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও উন্নয়ন কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে নেতৃত্বের ধরন কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য। আর তাই যোগাযোগ বিশেষজ্ঞগণ ৫টি শৃঙ্খলামূলক নির্দেশনা বা Fifth Discipline-এর কথা বলেছেন যার উপর এই নেতৃত্বের ধরন বহুলাংশে নির্ভরশীল।

ব্যক্তি দক্ষতা (Personal Mastery): প্রাতিষ্ঠানিক কার্যাবলী সম্পাদনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। তা থেকে উত্তরণে যোগ্য নেতৃত্বের জন্য প্রয়োজন নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে খুঁটিনাটি সকল বিষয়ের উপর ব্যাপক অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা ও দক্ষতা।

সামগ্রিকতার ধারণা (Systems Thinking): যোগাযোগ কৌশলে নেতৃত্বের ধরনের ক্ষেত্রে একজন সর্বময় ব্যক্তির বৃহৎ পরিসরে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের শুরু, শেষ এবং তার পরবর্তী প্রভাব ইত্যাদি সকল বিষয়ের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে তিনি যে কোনো বিষয়ের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করতে ও তার প্রভাব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারবেন। পাশাপাশি এটি সর্বোত্তম ফলাফল অর্জনে কি কি করণীয় তা জানার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে থাকে। সুতরাং কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বের প্রশ্নে সমস্যার সমাধানে, পরিকল্পনা গ্রহণে, প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সামগ্রিকতার ধারণার বিষয়টি অত্যন্ত কার্যকরী।

নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি (Mental Models): এটি যোগাযোগ কৌশলে নেতৃত্বের ধরনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কার্য সম্পাদনের সময় কোন কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে ‘কী করা উচিত’ বা ‘কেমন হওয়া উচিত’- এ জাতীয় প্রশ্নে ব্যক্তির মধ্যে পূর্ব থেকেই মনস্থিরতা বা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে থাকে। ব্যক্তির এই মনস্থিরতা বা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে নেতৃত্বের বিবেচনা থাকা উচিত, যার ভিত্তিতে সংঘটিত কার্যাবলীর অনেক বিষয়ে ধারণা লাভ করা সহজ হয়। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নতুন বৈপরীত্বমূলক ও শক্তিশালী অবস্থার উপলব্ধিগুলো দূর করা সহজ হয় এবং সংস্থার নিয়মাবলীর মধ্যে থেকেই যথাযথ পথে কার্যাবলী সম্পাদন সম্ভব হয়ে ওঠে।

লক্ষ্যপূরণে সম্মিলিত উদ্যোগ (Shared Vision): প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পাদনে কিছু দর্শন কাজ করে থাকে। এই দর্শনজাত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পূর্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে। সেগুলোকে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে গ্রহণীয় ও একীভূত করে লক্ষ্যপূরণের ক্ষেত্রে সম্মিলিত উদ্যোগে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া জরুরি। কেননা একটি সংস্থার সাধারণ দর্শন তথা লক্ষ্যপূরণে সকল সদস্যেরই ভূমিকা রয়েছে এবং সফল নেতৃত্বেকে এগিয়ে নিতেও এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ।

দলগত শিক্ষা (Team Learning): সফল নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ৫টি শৃঙ্খলার সর্বশেষটি হচ্ছে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে দলগতভাবে কাজ করা। একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানের জন্যে এটি মৌলিক শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। সাম্প্রতিক সময়ের প্রেক্ষিতে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা রক্ষায়  দলগতভাবে কার্য-সম্পাদন অত্যন্ত জরুরি। কেননা দলগতভাবে কার্য-সম্পাদনের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করা না গেলে প্রতিষ্ঠানও কোন ভিত্তিভূমি পায় না।  এটি একটি দলগত উন্নয়নের পদ্ধতি যার মাধ্যমে সকলের বাস্তবসম্মত চিন্তাপ্রসূত সিদ্ধান্ত কার্য সম্পাদনকে সহজ করে তোলে এবং  লক্ষ্যিত ফলাফল আনয়নে দলগতভাবে কার্য-সম্পাদনে যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয়।     

কৌশলগত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্বের ধরন একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নেতৃত্বের ধরনের ক্ষেত্রে আলোচিত পাঁচটি পর্যায়ের ভিতরেই নেতৃত্বের গুণাবলী হিসেবে সততা, বিনয়, সহযোগী মনোভাব ও সর্বজনীনতা নিহিত রয়েছে। আর এর ভিতর দিয়েই একটি সফল নেতৃত্ব স্বাধীনতা, মানবিকতা ও একটি সর্বজনীন শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করে প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাস ও শৃঙ্খলা।

আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় একটি টিভিসি প্রস্তুত

বিসিসিপি আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যানসিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিয়া) প্রকল্পের জন্য একটি টিভিসি প্রস্তুত করেছে যা এনআইডি কার্ডের স্বতন্ত্রতা এবং এর সুবিধাগুলোকে তুলে ধরেছে। এই টিভিসি জনগণের সচেতনতা সৃষ্টিতে এবং স্মার্ট এনআইডি কার্ডের ব্যবহারে নাগরিকদের উৎসাহিত করতে সংকল্পবদ্ধ।

বিভিন্ন বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এনঅআইডি কার্ডের ব্যবহার টিভিসিতে দেখানো হয়েছে। টিভিসিটি দেখে জনগণ তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে এনআইডি কার্ডের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।

উল্লেখ্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আইডিয়া প্রকল্পটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিসিসিপি স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন কম্পোনেন্ট (এসসিএ)-এর মাধ্যমে প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

যোগাযোগ মেলা “সাফল্যগাথা” অনুষ্ঠিত

 স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতে সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনে যোগাযোগ (এসবিসিসি)-এর ক্ষেত্রে সফলতা এনেছে এমন কার্যক্রমগুলোর সমন্বয়ে ‘সাফল্যগাথা’ নামে একটি যোগাযোগ মেলা গত ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ তারিখে ঢাকায় আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশের চিরাচরিত মেলার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে ১১টি সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান অভিনব, কার্যকরী, সফল এসবিসিসি  কার্যক্রমগুলো  বিভিন্ন চিত্তাকর্ষক ও পারস্পরিক মতবিনিময় পদ্ধতির মাধমে তুলে ধরেন।

প্রতিটি প্রকল্প উপস্থাপনার পর সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বের আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো একই সঙ্গে সুসজ্জিত স্টল-এর আয়োজন করে। মেলাটি উপলক্ষে ১২টি সফল কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ সম্বলিত একটি স্যুভেনিয়র প্রকাশ করা হয়।

কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে সফল কার্যক্রমগুলো বাছাই করে বাংলাদেশ বিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপের বেস্ট প্রাকটিস সাব গ্রুপটি। সাফল্যগাথার উদ্দেশ্য ছিল কার্যকরী এসবিসিসি চর্চা ও কৌশলগুলোকে স্বীকৃতি দেয়া এবং অন্যদেরকে এ সম্পর্কে  অবহিত করা, এর ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা, একই ধরনের সমস্যার জন্য নতুন সমাধান বের করার পরিবর্তে বিদ্যমান সফল চর্চাগুলোর পুনরাবৃত্তি করা এবং ব্যবহার বৃদ্ধি করা।

এটি ছিল সাফল্যগাথার দ্বিতীয় বছর। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে যা যোগাযোগ কর্মকর্তা, নীতিনির্ধারক, প্রণেতা ও উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ এহতেশামুল হক চৌধুরী, পরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; ডাঃ এ বি এম মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক আইপিএইচএন এবং লাইন ডিরেক্টর, এনএনএস; মিস শরিফা বেগম, প্রধান, স্বাস্থ্য শিক্ষা, ব্যুরো এবং লাইন ডিরেক্টর, এইচইপি; এবং ডাঃ মোহাম্মদ শরীফ, পরিচালক, এমসিএইচ কার্যক্রম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া সমাপনী অধিবেশনে ডাঃ মওদুদ হোসেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এনএনএস সমাপনী বক্তব্য রাখেন এবং ইউএসএআইডি-এর প্রতিনিধি মিস ব্রেন্ডা ডো সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

বিকেএমআই-এর কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ বিহেভিয়ার চেঞ্জ কমিউনিকেশন ওয়ার্কিং গ্রুপ এই মেলার আয়োজন করেছে। উল্লেখ্য  গ্রুপটি বাংলাদেশের এইচপিএন এসবিসিসি কার্যক্রমের মধ্যে  সমন্বয় ও যোগসূত্র স্থাপনে  কাজ করছে। বিকেএমআই  প্রকল্পটি ইউএসএআইডি-এর আর্থিক সহায়তায় যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে জনস্ হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ ও বিসিসিপি। এসবিসিসি কর্মকর্তা, নীতিনির্ধারক, প্রনেতা, গণমাধ্যম কর্মকর্তা, ও উন্নয়ন অংশীদারসহ প্রায় ২০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষণা-ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত সেমিনার অনুষ্ঠিত

বিসিসিপি এবং জনস্ হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ্  (জেএইচএসপিএইচ) যৌথভাবে বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষণা-ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত এক সম্মেলন আয়োজন করে। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন গত ২৬-২৭ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে গত বছরের গবেষণা কর্মে অনুদান প্রাপ্ত ২০ জন গবেষকের গবেষণা কর্মের ফলাফল ৬টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। ২০টি গবেষণা কর্মের মধ্যে বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থী গবেষক ও ১০ জন অভিজ্ঞ গবেষক রয়েছেন। এই ২০টি গবেষণার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে: (১) আবেগ ও আচরণগত সমস্যা এবং সিগারেট ধূমপায়ীদের আচরণ: বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পরিচালিত একটি জরিপ; (২) বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কিত জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি এবং ধূমপানজনিত আচরণ; (৩) বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে কৃষকদের তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ার কারণসমূহ; (৪) ঢাকা শহরে প্রকাশ্য স্থানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসরণ: ঢাকা শহরে পরিচালিত একটি জরিপ; (৫) ঢাকা শহরে ভাসমান মানুষের মধ্যে ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার; (৬) তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫-এর অধীনে বাংলাদেশে প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান মুক্ত চিহ্ন প্রদর্শনীর হার; এবং (৭) তামাক নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের ভূমিকা।

উক্ত গবেষণা কর্মের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফলাফল হচ্ছে- (১) উঠতি বয়সী কিশোরদের পরিবারের সদস্যদের অর্ধেকের বেশি কিশোরদের ধূমপান সম্পর্কে অবগত নন এবং কিশোরদের বর্তমান ধূমপান তাদের পিতামাতার শিক্ষা, পেশা ও পরিবারের সদস্যদের ধূমপানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত; (২) পুলিশের মধ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের নিয়ম ও ধারা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব রয়েছে। তবে তাদের অধিকাংশই (৯৮.৬%) প্রকাশ্য স্থানে ও যানবাহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করার যৌক্তিকতা বিষয়ে ইতিবাচক আচরণ দেখিয়েছে; (৩) পরিসংখ্যানগত দিক থেকে প্রতি শতাংশ জমিতে অন্যান্য শস্যের তুলনায় তামাক চাষ লাভজনক। এছাড়া আর্থিক লাভবানসহ তামাক কোম্পানির প্রলোভন ও সহায়তা এবং ফসলের বিক্রয় নিশ্চয়তা এবং প্রতিবেশীদের তামাক চাষে আগ্রহ কৃষককে তামাক চাষে উৎসাহিত করে; (৪) সব শ্রেণির উত্তরদাতাদের ৮৫% প্রকাশ্য স্থানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে অবগত আছে কিন্তু শহরবাসীর অর্ধেকের বেশি প্রকাশ্য স্থানে কোন ধূমপান মুক্ত চিহ্ন দেখেনি; (৫) ধোঁয়াবিহীন তামাকে আসক্ত হওয়ার ক্ষেত্রের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- এটি সহজলভ্য, সামাজিকভাবে গ্রহণীয়, সমবয়সীদের প্রভাব, সিগারেটের তুলনায় ধোঁয়াবিহীন তামাকের দাম কম এবং অধিকাংশই (৯১%) ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের শারীরিক ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জানে; (৬) তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ সম্পর্কে অন্য একটি জরিপে উত্তরদাতাদের অধিকাংশের (৯৪.৪%) জানা ছিল এবং ৮৬%-এর জানা ছিল যে, প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ কিন্তু তিন-চতুর্থাংশের জানা ছিল না যে, আইন ভঙ্গের শাস্তি হিসেবে আর্থিক দণ্ড হতে পারে; এবং (৭) একটি জরিপে প্রতীয়মান হয় যে, গণমাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রচারণা সঠিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ধারণাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ব্রিগেডিয়ার (অব) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি ও সভাপতি, আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়ন। ‘প্রায় ১০ লক্ষ লোক তামাকজনিত কারণে মারা যায়’ এই তথ্য উল্লেখ করে জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী আরো বলেন যে, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বাস্তবায়নে আমাদের এখন থেকেই কঠোর হস্তে তামাক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব মোহাম্মদ শাহজাহান, পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিসিসিপি। অন্যদিকে সমাপনী অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মুহম্মদ রুহুল কুদ্দুস, যুগ্ম সচিব ও সমন্বয়কারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে গেস্ট  অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিস রোকসানা কাদের, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্বস্বাস্থ্য), স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডা. শাহিদা হক, সিনিয়র ডেপুটি ডাইরেক্টর (রিসার্চ), বিসিসিপি।

এডভান্সেস ইন স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন ওয়ার্কশপ’ অনুষ্ঠিত

বিসিসিপি’র ২১তম এডভান্সেস ইন স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন ওয়ার্কশপ  গত ফেব্রুয়ারি ২৭ থেকে মার্চ ১০, ২০১৬ পর্যন্ত মিরপুরে অবস্থিত বিসিসিপি’র মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়। দুই সপ্তাহব্যাপী কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তি-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান হতে মধ্য ও উচ্চ পর্যায়ের ২৪ জন পেশাজীবী অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিসিসিপি’র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মিস ইয়াসমীন খান অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদান করেন।

এই কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের ধারণা প্রদান করা এবং এ বিষয়ে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে পথ নির্দেশ করা।

কর্মশালাটি সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সাজানো। শক্তিশালী যোগাযোগ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কার্যকর এডভোকেসি, সোশ্যাল মবিলাইজেশন ও যোগাযোগ কর্মকৌশল তৈরিতে অংশগ্রহণকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েই কর্মশালাটি পরিচালিত হয়েছে।

কর্মশালায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ফ্যাসিলিটেটরগণ যোগাযোগ প্রক্রিয়ার সাম্প্রতিক ও আধুনিক বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলের সাথে অংশগ্রহণকারীদের পরিচয় করিয়ে দেন। অংশগ্রহণকারীরা এসব আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করে সফটওয়্যারের মাধ্যমে কর্মশালায় একটি যোগাযোগ কার্যক্রম প্রণয়ন ও উপস্থাপন করেন। অংশগ্রহণকারীগণ এখন আরও কার্যকরভাবে পরিকল্পনা, প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে সক্ষম হবেন। সফল সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ও আধুনিক প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারও অংশগ্রহণকারীদের সামনে তুলে ধরা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্-এর নিয়মিত আয়োজিত এডভান্সেস ইন ফ্যামিলি হেলথ্ এন্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন ওয়ার্কশপ-এর আদলে পরিচালিত এই কর্মশালায় সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম সংক্রান্ত সফল যোগাযোগের অত্যাবশ্যকীয় উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা করা হয়। বিসিসিপি প্রতি বছর দুই সপ্তাহব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করে আসছে।

ডিজিটাল রিসোর্স ডিজেমিনেশন সভা অনুষ্ঠিত

ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে গত ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ (এসবিসিসি) শক্তিশালী করতে একটি ডিজিটাল রিসোর্স ডিজেমিনেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, মহাসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডায়াসের অন্যান্য অতিথিদের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সুইচ চেপে ডিজিটাল রিসোর্সগুলো উদ্বোধন করেন। তিনি সকল স্টেকহোলডারদেরকে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর এই টুলগুলো ব্যবহার করে এসবিসিসি কার্যক্রমগুলোর মান উন্নয়ন এবং সমন্বয় করার আহ্বান জানান ।

ডিজিটাল রির্সোসগুলো সম্পর্কে  একটি সংক্ষিপ্ত ডকুমেন্টারী উক্ত অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। রিসোর্সগুলোর ভিতরে রয়েছে- স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতে কর্মরত মাঠকর্মীদের জন্য এসবিসিসি ই-টুলকিট (http://www.k4health.org/bangladesh-toolkits); প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের জন্য এসবিসিসি ই-টুলকিট (https://www.k4health.org/toolkits/bangladesh-program-managers); মাঠকর্মীদের জন্য আটটি মডিউল বিশিষ্ট বাংলা ই-লার্নিং কোর্স (http://bdsbcc.org);   এসবিসিসি প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও পরিকল্পনাকারীদের  জন্য দুটি ই-লার্নিং কোর্স (http://bdsbcc.org); এবং তিনটি সরকারি ইউনিট- স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো: http://bhe.dghs.gov.bd/digitalarchive/, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান: http://archive.dghs.gov.bd/iphn_digitalarchive/, এবং তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ ইউনিট: http://www.dgfpbd.org/digitalarchive/ এর ডিজিটাল আর্কাইভসমূহ। সকল রিসোর্সগুলো অনলাইনে বিনামূল্যে সহজলভ্য। মাঠকর্মীদের জন্য তৈরি ই-টুলকিটটি অফলাইন এবং এন্ড্রোয়েড অ্যাপ (বিডি এইচপিএন টুলকিট)-এর মাধ্যমে ব্যবহারযোগ্য।

বিকেএমআই-এর কারিগরি সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি বিভাগ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা এবং পুষ্টি অবস্থার উন্নয়নে রিসোর্সগুলো প্রণয়ন করেছে। ডিজিটাল রিসোর্সগুলো বাংলাদেশেই নয়, এই অঞ্চলেও প্রথমবারের মতো তৈরি করা হয়েছে।

মিস রোকসানা কাদের, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্বস্বাস্থ্য), স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এই রিসোর্সসমূহ একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যপূরণে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।

অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও লাইন ডাইরেক্টর এমআইএস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আইসিটি নির্ভর উপকরণগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন যে, বাংলাদেশে জনগণের কল্যাণে ও মানসম্মত স্বাস্থ্য গঠনে এগুলো সহায়তা করতে পারে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাসচিব জনাব মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ইউএসএআইডি’র একটিং  ডাইরেক্টর মারিয়েতো সাটিন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থা, এটুআই, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৩৫ জন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে একটি কারিগরি সহায়তামূলক প্রকল্প বিকেএমআই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে অবস্থিত জনস্ হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ এবং বিসিসিপি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।