সামাজিক আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ (এসবিসিসি) দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক বিকেএমআই-এর অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা গত অক্টোবর ১৭, ২০১৬ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা, পুষ্টি (এইচপিএন) সেক্টরে বিকেএমআই-এর তিন বছরের এসবিসিসি কার্যক্রম এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি যোগাযোগ ইউনিট- আইইএম, বিএইচই ও আইপিএইচএন-এ বিকেএমআই-এর দক্ষতা বৃদ্ধি ফ্রেমওয়ার্ক- স্বতন্ত্র, প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত- এই তিনটি পর্যায়ে পরিচালিত হয়। তিনটি ইউনিটের প্রতিনিধিগণ তাদের কার্যক্রম বর্ণনা করেন। এসবিসিসি টুল ও রিসোর্স সম্বন্ধে মিস শরিফা বেগম, বিএইচই প্রধান ও লাইন ডিরেক্টর-এইচইপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; ডাঃ মওদুদ হোসেন, উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এনএনএস; এবং জনাব মোঃ ফেরদৌস আলম, যুগ্ম সচিব ও পরিচালক, আইইএম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর যথাক্রমে স্বাতন্ত্রিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত পর্যায়ে মত বিনিময় করেন।
মিস নীলিমা শারমিন, পরিবার কল্যাণ সহকারী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কুমিল্লা এবং মিস হুরাইনি ফাহমিদা জেনী, স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম মাঠ পর্যায়ে মাঠকর্মীদের জন্য ই-টুলকিট ব্যবহার ও ই-লার্নিং কোর্স সম্বন্ধে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। মানিকগঞ্জের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য পরিদর্শক জনাব শাহাদাত মোল্লা এবং মুন্সিগঞ্জের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর থেকে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জনাব শাহীন আলম এসবিসিসি তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন চেকলিস্ট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ বিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ডাঃ এজেডএম জাহিদুর রহমান এবং মিস সায়কা সিরাজ, বিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপ ও সাফল্যগাথা বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন মিস রোকসানা কাদের, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্ব স্বাস্থ্য) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে সভাপতি স্বাস্থ্য সেক্টরের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে উল্লেখ করেন যে, নেতৃত্ব শুধু মন্ত্রণালয় থেকেই হওয়া উচিত নয়। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কাজ হয়, সুতরাং সম্মুখ সারির কর্মীদের এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। নিকট ভবিষ্যতে কী করা প্রয়োজন তা পরিকল্পনা করা আমাদের দরকার। তিনি বিকেএমআই ও ইউএসএআইডি’কে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আমাদের সবার সহযোগিতা এবং একসাথে কাজ করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিকেএমআই-এর প্রকল্প পরিচালক রেবেকা আরনল্ড ও তার টিমকে শেষ তিন বছরের অর্জনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি তাদেরকে একটি কার্যকরী পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন চেকলিস্ট প্রণয়ন এবং মাঠ পর্যায়ে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে তদারকির জন্যও ধন্যবাদ দেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ডাঃ মোঃ এহতেশামুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে অর্জন সুপরিচিত। এর অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। আমার অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি, এই অর্জনের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্য আমাদের সামনে। এসডিজি অর্জনে সরকার, বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের একসাথে কাজ করা দরকার।
অনুষ্ঠানে বিকেএমআই প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে মুক্ত আলোচনা এবং অংশগ্রহণকারীগণ তাদের চিন্তাচেতনা ও ধারণা বিনিময় করেন। সরকারি. বেসরকারি সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার এবং গণমাধ্যম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিসিসিপি গত ২২-২৫ অক্টোবর ২০১৬ পর্যন্ত সিলেটে একটি ৪ দিনের এডভোকেসি ও সোস্যাল মবিলাইলেশন বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল কার্যক্রমের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এমন এডভোকেসি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় অংশগ্রহণকারীদের সাথে আলোচনা করা। প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ), প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট (পিআইইউ) এবং পিএ ইউনিট থেকে মোট ৪২ জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক (এমআইই) জনাব এ. এস. এম. মাহবুবুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং কর্মশালার উদ্বোধন করেন। জনাব ধীরাজ কুমার নাথ, স্টাফ বিশেষজ্ঞ (নগর স্বাস্থ্য), বাংলাদেশ রেসিডেন্ট মিশন, এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জনাব নুরুল আবছার, উপ-প্রকল্প পরিচালক (অর্থ), ইউপিএইচসিএসডিপি, উদ্বোধনী পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় এডভোকেসি, সোস্যাল মবিলাইজেশন, কৌশলগত যোগাযোগ, কমিউনিটি ভিডিও কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি ইত্যাদির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। ইউপিএইচসিএসডিপি’র প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক সমাপনী পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং সনদপত্র প্রদান করেন। দুই সেশনে Human Mind & Behavior and Bangladesh: Journey towards Progress বিষয়ক তাঁর প্রতিবেদনটি অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং তারা একটি অর্থপূর্ণ বিষয়ে তাদের আলোকিত করার জন্যে প্রকল্প পরিচালককে ধন্যবাদ জানান।
প্রধান ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে ছিলেন মিজ ইয়াসমীন খান, ডাঃ নজরুল হক ও বাদল কৃষ্ণ হালদার। তাঁরা কর্মশালায় এডভোকেসি ও সোস্যাল মবিলাইজেশন সংক্রান্ত বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন। অংশগ্রহণকারীগণ অনেক সক্রিয় ও শেখার ক্ষেত্রে আগ্রহী ছিলেন যা কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ও ফ্যাসিলিটেটর উভয়কেই অবদান রাখার ক্ষেত্রে পরিবশে সৃষ্টি করেছিল। কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগের উদ্দেশ্যে অংশগ্রহণকারীদের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে কর্মশালাটি শেষ হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৬-তে একটি স্টল স্থাপন করে।
১৯ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং তা ২১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত চলে। বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে হল-২ এর ৩১ নম্বর স্টলে আইএমইডি কার্যক্রমের ডিজিটাল প্রদর্শন হয়েছিল ।
আইএমইডি’র সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) স্টলে টেন্ডারারদের জন্য ইলেক্ট্রনিক গর্ভনমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেমে তাৎক্ষণিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা করেছিল। সিপিটিইউ দেশব্যাপী ই-জিপি বাস্তবায়ন করছে।
মেলায় ই-জিপি ওয়েবসাইট (www.eprocure.gov.bd)-এর কার্যক্রম এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট মোবাইল অ্যাপ দর্শনার্থীদের জন্যে প্রদর্শিত হয়। এ সকল বিষয় দর্শনার্থীদের বোঝার সুবিধার্থে স্টলে আইএমইডি এবং সিপিটিইউ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
Strategic Communication Approach (SCA)-এর অংশ হিসেবে বিসিসিপি আইএমইডি’র পক্ষে স্টলটি স্থাপন এবং এর ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্মার্ট কার্ড জনগণের হাতে পৌঁছেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছে তাঁর স্মার্ট এনআইডি কার্ড হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে এটি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর বায়োমেট্রিক বিবরণ গ্রহণের মাধ্যমে তাঁকে স্মার্ট কার্ড দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট এনআইডি কার্ডের ব্র্যান্ড দূত মাশরাফি বিন মোর্তজাসহ জাতীয় ক্রিকেট দলের সকল সদস্যদের স্মার্ট এনআইডি কার্ড প্রদান করেন। মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলী, সাংসদ, বিদেশী কূটনীতিক, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারগণ, সুশীল সমাজ এবং উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে পদক্ষেপ নিয়েছে। স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে সাহায্য করবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব চিমিয়াও ফেনও বক্তব্য রাখেন এবং Identification System for Enhancing Access to Services (IDEA)-এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মোঃ সালেহ উদ্দিন স্মার্ট এনআইডি কার্ডের উপর একটি সক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় আইডিইএ প্রকল্পটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বিসিসিপি স্মার্ট কার্ডটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে কৌশলগত যোগাযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।